মোগলমারিতে উদ্ধার ৯১টি বুদ্ধমূর্তি
মাটি খুঁড়তে গিয়ে ২০০৩ সালে সর্বপ্রথম দাঁতনের মোগলমারিতে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিলেন স্থানীয়রা৷ বিষয়টি পুরাতত্ব বিভাগকে জানিয়ে শুরু হয়েছিল তৎপরতা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় খননকার্য চালায় এই অঞ্চলে৷ এই খননে একাধিক বৌদ্ধবিহারের স্মৃতি উদ্ধার হওয়াতে ঐতিহাসিক সৌধের মর্যাদা দিয়ে রাজ্য সরকার সরাসরি খননের দায়িত্ব নেয়৷ ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে সরকারের পক্ষ থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয় ওই স্থানে একটি অতিথি নিবাস ও প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহশালা তৈরি করতে৷
এবার দশম পর্যায়ের খনন শুরু হয়েছে ১০ জানুয়ারি থেকে, চলবে ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত৷ ইতিমধ্যে এই স্থান থেকে সুপ্রাচীন বুদ্ধমূর্তি, স্বর্ণমুদ্রা, ধাতব সিল, টেরাকোটার বিভিন্ন মূর্তি উদ্ধার হয়েছে৷ খবর শুনে জাপান, বাংলাদেশ , কোরিয়া, ব্রিটেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও হাজির হয়েছিলেন৷
দশম দফার খনন শুরু হতেই রবিবার ও সোমবার যা উদ্ধার হল, তাতে আরও বেশি চমক রয়েছে মাটির তলাতে একটি ঘরের মধ্যে এক মিটার লম্বা ও আধ মিটার চওড়া খালের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় বিভিন্ন রকমের ৯১টি ধাতব মূর্তি৷ যার মধ্যে ২০টি ব্রোঞ্জ-নির্মিত বুদ্ধমূর্তি ৷ তাতে আরও বেশি উৎসাহ উদ্দীপনা বাড়ে পুরাতত্ত্ববিদদের মধ্যে৷
মোগলমারীকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারী পর্যন্ত “মোগলমারি বুদ্ধিষ্ট হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল” শুরু হয়েছে৷ এই উদ্ধার তাতে অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে৷ সোমবার উপস্থিত হয়েছেন সর্বভারতীয় বৌদ্ধ সংগঠনের নেতৃত্ব ও সদস্যরা ৷
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধপ্রিয় মাহাত্রে বলেন, “প্রাচীন ভারতের নালন্দা, তক্ষশীলা, ওদন্তপুরী, পাহাড়পুর ইত্যাদির মতো বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে এই মোগলমারি৷ দেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধবিহার এটা৷ বৌদ্ধভিক্ষু, বণিকরা এখান থেকে কোনও কারনে চলে যাওয়ার সময়ে এই সমস্ত মূর্তি লুকিয়ে রেখে গিয়েছিলেন৷ আমরা সরকার এবং বিশ্ববৌদ্ধ সংগঠনের কাছে আবেদন করবো এই স্থানকে ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করার জন্য৷” খননকার্যের দায়ীত্বে থাকা পুরাতত্ত্ববিদ প্রকাশচন্দ্র মাইতি বলেন, “ এতদিন আমাদের এই স্থান নিয়ে সন্দেহ ছিল এটি বৌদ্ধবিহার কিনা৷ এখন আমরা সব দিক থেকে সুনিশ্চিত হলাম৷ উদ্ধার হওয়া মূর্তিগুলি সংরক্ষণের।
Leave a Reply