এম ধর্মবোধি থের, সম্পাদক- জ্ঞান অন্বেষণ অনলাইন নিউজ। অধ্যক্ষ, ঐতিহাসিক পুণ্যতীর্থ আবদুল্লাপুর শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার।
আমাদের সমাজে বর্তমানে সন্তানের কাছে মা বাবা থেকে শুরু করে পুজনীয় ব্যাক্তিরা কোন রকম শ্রদ্ধা সম্মান পাচ্ছেন না সংখ্যায় বেশি ছেলে মেয়ের কাছে।
প্রশ্ন থাকে বারাংবার…………কেন…?
কি জন্য? কি কারনে?
আজ এক মা ও বাবার কথা শুনে, নিজের অজান্তে কান্নায় নিজের চোখ পানিতে ভিজে গেল। কিছু লিখতে ইচ্ছে হলো। এই বাস্তব সত্য অসহায় পিতা ও মাতার কষ্ট দেখে…
এক জন মায়ের কুলে পাঁচ ছয়টি ছেলে মেয়ে জম্ম নেয়, মায়ের একটি মাত্র কুলে দুইটি মাত্র স্থন ভোজন করে সন্তান বড় হয় আদর যতনে, বাবার হারভাঙ্গা পরিশ্রমে আয় করা অর্থে মায়ের অতুলনীয় ভালাবাসায় বাবার প্রাণপন প্রচেষ্ঠায় বড় হয় সন্তান।
কেউ ডাক্তার কেউ মাষ্টার কেউ বা জর্জ উকিল সরকারের বড়কর্তা ব্যাংকার ইত্যাদি ইত্যাদি।
কত রাত্রে না খেয়ে ঘুমিছেন মা,কতদিন অনাহারে উপর্জন করেছেন বাবা একমাত্র নিজ সন্তানের মঙ্গলের জন্য,
রাতদিন সম পরিশ্রম করে সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষত করেছেন মা ও বাবা। ভগবানের কাছে কত প্রার্থনা করেছেন আপন সন্তানের রোগমুক্তি কামানায়।
তথাগতের কাছে চেয়েছেন আপন জীবনের বিনিময়ে সন্তানের সুন্দর জীবন। নিজের জীবন কে জীবন মনে করেন নি কখনো জনক জননী। সকল সুখ বিলিয়ে দিয়েছেন আপন পুত্র কন্যার কল্যানে।
সন্তান বড় হয়ে সংসার করেছে তারাও সন্তান জম্ম দিয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রামে বড় বড় বাড়ি গাড়ি অট্টলিকা টাকার মালিক হয়েছে।
এক জন মা বাবার পাঁচ ছয় সন্তানের পাঁচ ছয়তলা বাড়িতে থাকা ও খাওয়ার জায়গা হয় না। তাদের অযত্ন অবহেলায় সেই গ্রামের কুড়ের ঘরে স্থান হয় করুন আবস্থায়।
বৃদ্ধ সময়ে অবহেলা তুচ্চতাচ্চিল্যতায় জীবন চলে মরণ প্রহর গুনা প্রর্যন্ত, কিছুই করার থাকে না অসহায় শক্তিহিন এই মানবের, নিজেকে তখন পৃথিবীর ময়লা আর্বজনা মনে করে জীবন যৌবন বিলিয়ে দেওয়া জনক জননী হাবুডুবু খায় কষ্টের সাগরে।
কি জন্য ? কারন কি……?
বুদ্ধ বলেছেন
বহুসচ্চাঞ্চা, সিপ্পাঞ্চা বিনয়ো চ সুসিকখিতো
সুভাসিতা চ যা বাচা, এতং মঙ্গলমুত্তমং।
বিনয়ে সু-শিক্ষত হয়ে বহু শিপ্ল শিক্ষা করা, নানা শাস্রে জ্ঞান লাভ করা, সুবাক্য শ্রবণ করা,নিজেকে সাম্যক পথে এগিয়ে নেওয়া উত্তম মঙ্গল।
কিন্তু মা বাবা সন্তানকে বিনয় ও সু-শিক্ষায় শিক্ষাত করেন না!! সাধারন শিক্ষায় শিক্ষত করেন….মাত্র..!
বুদ্ধ বলেন
অরতি বিরতি পাপা,মজ্জপানা চ সাঞ্ঞমো,
অপ্পমাদো চ নিবাতো চ এতং মঙ্গলমুত্তমং।
কায়িক ও মানসিক পাপের অনাসক্তি, শারীরিক ও বাচনিক পাপের বিরতি,মদ্যপান ত্যাগ এবং সকল প্রকার অ-কুশল (পাপ কাজ) ত্যাগ করে অপ্রমত্তভাবে পুণ্যকর্ম সম্পাদন করা উত্তম মঙ্গল।
বর্তমান সমাজ বিনির্মানে মা বাবারা বুদ্ধের এই শিক্ষা দিচ্ছেন কি না তা যতেষ্ট সন্ধিহার! যার কারন হেতু সন্তান সঠিক ভাবে পাপ কি, পুণ্য কি বুঝতে সক্ষম হচ্ছে না।
বুদ্ধ বলেন
গারোবো চ নিবাতো চ সন্তটঠী চ কতঞ্ঞুতা,
কালেনা ধম্মসবণং এতং মঙ্গলমুত্তামং।
পুজনীয় ব্যক্তির পুজা করা,তাদের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান প্রদর্শন করা,প্রাপ্ত বিষয়ে সন্তষ্ট থাকা, উপকারীর উপকার স্বীকার করা, যথা সময়ে ধর্ম শ্রবণ করা উত্তম মঙ্গল।
মা বাবারা বুদ্ধের এই শিক্ষা কি নিজ সন্তানদের দিচ্ছেন….প্রশ্ন থেকে যায়?
পিতা মাতা তো শিক্ষা দিচ্ছে অর্থ আয় করার জন্য সাধারন শিক্ষা।
সম্মান সেবা করার শিক্ষা কতজন মা বাবা দিচ্ছেন?
শিশুর মনন শীলতার জন্য দরকার সু-শিক্ষা দওয়ার দরকার।
যাহার কারণে প্রতিষ্ঠানীক শিক্ষায় শিক্ষত হয়ে অন্ধের মত অর্থ আয় করার সকল প্রন্থা অর্জন করেছে সন্তান সম্পাদায়..
বুদ্ধের শিক্ষা, বিনয়ের শিক্ষা, সু-আচার আচরনের শিক্ষা পাচ্ছেনা বলে পুত্রের কাছে পিতা মাতা গুরু জন আজ অবহেলিত।
আসুন বুদ্ধের সেই মঙ্গল সুত্ত,সিঙ্গালাবাদ সুত্রের শিক্ষায় নিজ সন্তানদের শিক্ষত করি।
গৃহিনিতী অবলম্বন করে সুন্দর ও সুস্থ সমাজ নির্মান করি। (সংক্ষেপ)
Leave a Reply