প্রথমেই আমি সশ্রদ্ধ বন্দনা জানাই সেই মানবপুত্র বুদ্ধকে যিনি দেবতা ছিলেন না, যিনি ছিলেন সম্যক কর্মে বিশ্বাসী, যুক্তিবাদিতায় বিশ্বাসী, ত্যাগে বিশ্বাসী, অহিংসায় বিশ্বাসী, সকল মানুষে মঙ্গলে বিশ্বাসী, সকল প্রাণী সুখে বিশ্বাসী এবং আন্তরিকতায় সর্বকালের কল্যাণব্রতী মানুষ, কবিগুরু যাঁকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে শ্রদ্ধা করতেন।
মূল বিষয় আলোচনা করার আগে পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. পবিত্র সরকারের ‘শিক্ষা ও চেতনা’ বই থেকে কিছু উদ্বৃত করা প্রাসঙ্গিক বলে মনে করছিঃ
“এক সময় গুরুর উপর অনেক কিছু নির্ভর করত। উপনিষদের যুগে গুরুর পায়ের কাছে বসে শিক্ষার মধ্যে গুরুর অভ্রান্ততায় বিশ্বাস ছিল। গুরু যাই বলবেন তাই বেদবাক্য, তা-ই চূড়ান্ত জ্ঞান, তাকে প্রতিপ্রশ্ন করার অধিকার কারো ছিল না। ‘কি; গুরুর উপর কথা? সব ধর্মের পুরুত-পাদ্রী-মোল্লা স্থানীয় লোকেরা সেই ধরণের ছদ্ম-গুরু। তারা জানার ভান করে, কিন্তু জানে না। তারা শুধু মানে, প্রশ্ন করে না। অনেক সময় বৈজ্ঞানিকেরা, প্রযুক্তিবিদরাও এই ভুল উত্তর উস্কে দেন, নভোপদার্থ-বিজ্ঞান আর বেদান্তকে গুলিয়ে খিচুড়ি বানিয়ে।
এই রকম আরো ভণ্ডগুরু আছেন_ তথাকথিত গুরুদেবেরা যেমন। তাদের জানার মধ্যে চর্চিত চর্বণ ছাড়া আর কিছু নেই, হয়তো পুরানো কথাগুলোকেই জোর দিয়ে বলেন। সম্পূর্ণ মিথ্যার উপর এবং মানুষের ভয়, আশংকা ও উদ্বেগের উপর তাদের জীবিকা। যে-শিক্ষা আমরা পাই তা স্বতঃসিদ্ধভাবে আমাদের চেতনায় অর্থাৎ প্রগতিশীল মানবিক চেতনায়, পৌঁছে দেয়না। এ শিক্ষা কুসংস্কারাচ্ছন্ন হওয়া আটকায় না, সাম্প্রদায়িক হওয়া আটকায় না, ভোগবাদী ও স্বার্থপর হওয়া আটকায় না, অপরাধী হওয়া আটকায় না।
পশুর ভাষা নেই, মানুষের ভাষা আছে। কিন্তু ভাষা থাকার ফলেই মানুষ মিথ্যা কথা বলতে পারে, সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী তৈরি করতে পারে, যতখানি বলবার তার চেয়ে কম বলতে পারে, কিংবা উত্তর প্রত্যাখ্যান করতে পারে। ফলে আমরা যারা প্রশ্ন করেছিলাম তাদের উপর আবার নতুন প্রশ্নের দায় ফিরে আসে – ‘যে উত্তর পেলাম তা ঠিক উত্তর তো? ‘ঠিক যে, তা কিভাবে বুঝব? তখন আরও পাঁচজনকে জিজ্ঞেস করতে হয়, আরো দশটা বই দেখতে হয়। তখন পৃথিবীর ইতিহাসে ভুল উত্তর ঠিক উত্তরে দন্ধ চলে এসেছে সে সম্বন্ধে একটু জানতে হয়। সেটাই আমাদের জ্ঞানলাভের ইতিহাস, সেটাই আমাদের শিক্ষার ইতিহাস।
পরিবার বা সমাজ সেই শৈশব থেকে “ঠাকুন্নমো করো” থেকে যে অলীক বশ্যতা শেখায়, স্কুল-কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তার বিশেষ কোন প্রতিষেধক বা প্রতিবিধান তৈরি করতে পারেনি।”
আমরা আজ বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের যুগের একুশ শতকের মানুষ। কিন্তু বুদ্ধ ছিলেন প্রাচীন যুগের মানুষ। প্রাচীন যুগের মানুষ হয়েও উনি ছিলেন কর্মবাদী, আত্মনির্ভরশীল, আধুনিক ও মুক্তচিন্তার মানুষ। কারন, অলৌকিক কোন শক্তির উপর নির্ভর না করে তাঁর ব্যবহারিক জীবনে কঠোর সাধনার মাধ্যমে লাভ করেছিলেন বোধিজ্ঞান। বুদ্ধ সে সময়ের প্রচলিত যুক্তিহীন ধর্মীয় অনুশাসন, সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, সমাজের অসাম্য ও অসংগতি দেখে সম্যক উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে অন্ধবিশ্বাস, যুক্তিহীন অন্ধ আনুগত্য ও শ্রদ্ধা মানুষের কল্যাণ বয়ে আনে না, মানুষকে জ্ঞানী করে না, সৃজনশীল করে না এবং প্রজ্ঞাবান করে না। ফলে মানুষের মুক্তির পথ হয়ে যায় রুদ্ধ। অন্ধবিশ্বাস ও যুক্তিহীন আনুগত্য শুধু পুরোহিতের, ধর্মীয় গুরুদের রাজন্যবর্গের ও পুঁজিবাদের স্বার্থসিদ্ধি করে। বৃহত্তর সমাজের কোন কল্যাণ বয়ে আনে না। সমাজের অসাম্য, অশান্তি ও ক্রোধ সৃষ্টি করে যা মনুষ্যত্ব বিকাশ ও বিশ্বশান্তির অন্তরায়।
তাইতো কালামসুত্রে বুদ্ধ বলেছেনঃ শুধু জনশ্রুতি বা কিংবদন্তির উপর নির্ভর করে কিছু বিশ্বাস করোনা। বংশপরম্পরা কোন প্রথা বা ঐতিহ্য চলে এসেছে বলে কিছু বিশ্বাস করো না। শুধু বহুজন বলে আসছে বলে বিশ্বাস করো না। শুধু তোমাদের ধর্মগ্রন্থসমূহে লিখা আছে বলে বিশ্বাস করো না। শুধু তোমাদের গুরু বা শিক্ষক বলছে বলে বিশ্বাস করোনা। পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ পর যখন বিশ্বাস করার মত যৌক্তিক কারন খুঁজে পাবে এবং দেখবে যে তা মেনে চললে নিজের, সমাজের, সকল মানুষ ও প্রাণী জগতের কল্যাণ হবে তখন তা বিশ্বাস করো এবং মেনে চলে জীবন নির্বাহ করো।” বুদ্ধ আরো বলেছেন, “এহি পসসিকো”- আমি যা বলছি তা অন্ধভানে বিশ্বাস না করে আস, দেখ, যুক্তির কষ্টিপাথরে পরীক্ষা করে গ্রহণ করবে। বুদ্ধমতবাদে অন্ধবিশ্বাসের, অন্ধ আনুগত্যের ও শ্রদ্ধার জায়গা নেই। বরং আছে যুক্তির মাধ্যমে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার নিরন্তর সাধনা করার আহ্বান।
বুদ্ধ নিজেকে কোনদিন ত্রাণকর্তা বা মুক্তিদাতা হিসাবে দাবী করেননি। উনি ছিলেন একজন পথপ্রদর্শক মাত্র। তাঁর জীবনের শেষ দিনে এক অতি তাৎপর্যপূর্ণ উপদেশ দিয়েছিলেন। বলেছিলেনঃ “তোমরা তোমাদের দীপ হও, তোমরাই তোমাদের আশ্রয়, তোমরা আত্মনির্ভরশীল হও, সত্যকে প্রদীপের মতো জেনে তাঁর অনুবর্তী হও। অপরের সাহায্য প্রার্থী হয়ো না।” বুদ্ধ মানব জাতি এবং জীব জগতের কল্যাণের জন্য এক নতুন রাজ পথের (শীল, সমাধি ও প্রজ্ঞা তথা আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ) সন্ধান দিয়েছেন।
আজ একুশ শতকে এসে আমরা বৌদ্ধরা যে প্রকারের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান এবং বুদ্ধবাণীর ব্যাখ্যা করছি তাতে মনে হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্ম কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের সোনার খনিতে রূপান্তরিত হয়েছে। আজ সবচাইতে বড় প্রশ্ন বুদ্ধ যে পথের সন্ধান দিয়েছেন আমরা কি সে পথ ধরে চলছি? মনে হয় না। আমরা পথ হারিয়েছি। ছোট্ট অন্ধকারাচ্ছন্ন গলি পথ ধরে চলছি যা অন্ধবিশ্বাস, অন্ধ আনুগত্য, বাস্তবতা বহির্ভূত ধর্মদেশনা ও যুক্তিহীন আচার অনুষ্ঠানে পরিপূর্ণ। বুদ্ধের গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ বানী ও দর্শন আমরা সম্যকভাবে অনুধাবন ও অনুসরণ করতে পারছিনা। ফলে বুদ্ধবাণীর নির্যাসকে বাদ দিয়ে আমরা গেরুয়া রং এর একখানা খোলস (চীবর) কে নিজেদের আশ্রয় মনে করছি। ‘বহুজন হিতায় ও বহুজন সুখায়’ এর পরিবর্তে ভিক্ষুজন সুখায়, ভিক্ষুজন হিতায়’কেই মুক্তির একমাত্র উপায় বলে মনে করছি। মনে করছি শুধু ভিক্ষুসংঘকে সংঘদান, আটপ্রকার অপরিহার্য বস্তুদান (অট্টপরিখা) এবং কঠিন চীবর দান করলেই সমস্ত পাপ স্খলন হয়ে নির্বাণ লাভের পথ সুগম হয়ে যাবে। ফলে আমাদের সমস্ত ধর্মীয় কর্মকাণ্ড ভিক্ষু সংঘকে তুষ্ট করাতেই আবর্তিত হচ্ছে। যুগ যুগ ধরে ভিক্ষু সংঘ দেশনা করে আসছেন তাঁরাই হলেন পুন্যক্ষেত্র এবং একমাত্র তাঁদেরকে দান করলেই অনেক পুণ্য হয়। আর কঠিন চীবর দান করলে তো কথাই নেই। তাঁরা দেশনা করেন পৃথিবীর সমস্ত দানীয় বস্তু এক করে দান করলেও একখানা কঠিন চীবর দানের ষোল ভাগের এক ভাগের সমান পুণ্য হবেনা। তার অর্থ ভিক্ষুসংঘ মুক্তিদাতা বা ত্রাতার আসনে বসে আছেন যা বুদ্ধের মতবাদের সম্পূর্ণ বিপরীত।
এখানে উল্ল্যেখ করতে চাই যে আমরা যখন কোন ধর্মীয় সভায় এ ধরণের আলোচনা করি বা বক্তব্য দেই তখন ভিক্ষুরা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এবং সঠিক ব্যাখ্যা না করে উল্টো তাঁদের বক্তব্যে অসহিষ্ণুতাই প্রকাশ পায়। অথচ আমরা জানি যুক্তি দিয়ে বুদ্ধকে বুঝানোর ফলে বুদ্ধ নিজেই ‘নারীদের ভিক্ষুণী সংঘ করার অনুমতি দেন এবং পিতা মাতার অনুমতি ছাড়া ছেলেদের প্রব্রজ্যা না দিতে বিধান করেন। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে পৃথিবীর কোন ধর্মপ্রবর্তক যে কথাটা বলার উদারতা দেখাতে পারেননি, বুদ্ধ সেটাই খুন স্বাচ্ছন্দ্যেই পেরেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর ধর্ম যে-কোন ব্যক্তির প্রশ্নের সম্মুখে উন্মুক্ত রইল এবং যে-কেউ ধর্মে নিহিত সত্যটা বুঝে নিতে পারেন। কোন ধর্ম-প্রতিষ্ঠাতাই নিজের ধর্মটাকে এভাবে এত বড়ো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করাতে সাহস করেন নি। বুদ্ধের চিন্তার আলোকে ভাবলে কতিপয় প্রশ্ন তোলা কিন্তু এসময়ের অনিবার্য দাবী হয়ে দাঁড়ায়। প্রশ্নকে ভয় পান কেন? ধর্মকথা নিয়ে প্রশ্ন তুললেই আমরা এত অসহিষ্ণু হয়ে উঠব কেন?
আমি কিন্তু দানের বিপক্ষে নই। বৌদ্ধধর্ম-দর্শনে ‘দান করা ছাড়া কি আর কোন বক্তব্য নেই? সব সময় ‘ভিক্ষুসংঘকে দান’ বিষয়ক বক্তব্য প্রধান্য পায় কেন? তাঁদের বক্তব্যে দুঃখী মানুষের দুঃখ-কষ্টের প্রকৃত কারন ব্যাখ্যা না করে অতীত কর্মফলের দোহাই দিয়ে তাদের দুঃখ-কষ্টকে আরো করুণ করে তুলছে আর ঠেলে দেয়া হচ্ছে আধ্যাত্মিকতার নামে এক অজানার দিকে। সাধারণ জনগণ অসহায়। কি করতে হবে তা জানছে না। ধর্মগুরুরা অসহায় মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন, তাদের প্রতি করা হচ্ছে চরম অবহেলা। এটা কোন বিবেকবান মানুষের সম্যক ধর্মদেশনা হতে পারে না। কারণঃ
এই প্রকার দেশনায় মানুষ আলোকিত হচ্ছে না। যুক্তিবাদী হচ্ছে না ও সৃজনশীল হচ্ছে না। মানুষ হয়ে যাচ্ছে পরজীবী অর্থাৎ ভিক্ষুসংঘই হচ্ছেন একমাত্র আশ্রয়। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গের সম্যক প্রয়োগে ব্যর্থ হচ্ছে। এর কারণ যুগ যুগ ধরে এ ধরণের অবৌদ্ধচিৎ, অবৈজ্ঞানিক দেশনা সাধারণ মানুষকে বুঝানো হচ্ছে। সাধান মানুষও এসমস্ত কথা শুনতে শুনতে সময়ের সুনিপুণ পরিচালনায় অন্ধভাবে বিশ্বাস করছে ভিক্ষুরা যাই বলছেন তাই সত্য। বিচার বিশ্লেষণ করার চিন্তাটুকু হারিয়ে ফেলেছে কারণ খোলা চোখের বন্ধ জানালা কেউ খুলে দিতে চাচ্ছে না। ফলে মানুষ বাস্তব জীবনে দুঃখ (সমস্যা) কি এবং দুঃখের কারণ কি তা চিহ্নিত করতে পারছে না। ফলে দুঃখ থেকে মুক্তির পথ হয়ে যাচ্ছে রুদ্ধ। যুক্তিবাদী সমাজ তৈরি হচ্ছে না যা মানবতা ও মনুষ্যত্ব বিকাশের অন্তরায়।
এই প্রকার দেশনা কতটুকু যুক্তিসংগত, কতটুকু বিজ্ঞান সম্মত এবং আদৌ বুদ্ধ বলেছিলেন কি না আর বলে থাকলে কোন পরিস্থিতিতে, কোন পরিবেশে বলেছিলেন তা সম্যকভাবে গবেষণা করার এবং ব্যাখ্যা করার বিষয়। আর ব্যাখ্যার ওই জায়গাটাতে এসে প্রয়োজন পড়ে দার্শনিকতার, ঠিক করতে হয় কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা ব্যাখ্যা করবো এবং বোঝাবো। ইতিহাসের প্রতিটা ঘটনায় কার্যকারণ থাকে এবং থাকে দ্বন্ধ। এই দ্বন্ধটাকে বোঝাই জরুরী।
দান’ শব্দের অর্থ কি তা বুঝতে হবে আর বুদ্ধ ;দান’ বলতে কোন বিষয়টাকে প্রধান্য দিয়েছেন তাও উপলব্ধি করতে হবে। এই জায়গাতেই প্রয়োজন পড়ে দার্শনিকতার, সম্যক চিন্তার ও সম্যক ব্যাখ্যার। আমি বুঝি ‘দান’ শব্দের অর্থ ত্যাগ। মনের হিংসা, রাগ, লোভ, দ্বেষ, মোহ, কামনা, বাসনা, ত্যাগ করা। আর মানুষকে জ্ঞান দান করা, অসহায়কে সাহায্য করা, অন্ধজনকে আলো দেওয়া, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেয়া, অন্নহীনকে অন্ন দেওয়া, তৃষ্ণাত্বকে জল দেয়া, রোগীকে সেবা দেওয়া, সমগ্র জীব জগতকে প্রেম দেওয়া- এগুলোইতো দান, এই দানই “বহুজন হিতায়, বহুজন সুখায়”। এ দানের মধ্যে কোন বিশেষ শ্রেণী নেই, নেই কোন গোত্র আর নেই কোন দেয়া-নেয়ার বিষয়।
প্রচলিত ধর্মদেশনা, শাস্ত্র আলোচনায় মানুষকে মৌলিক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারছে না, এ অবৈজ্ঞানিক চেতনা ( মিথ্যা দৃষ্টি) অপরিবর্তিত রেখে অগ্রসর হলে আমাদের নিত্য দিনের সমস্যাগুলোর সমাধান ত হবেইনা বরং এগুলো জটিলতর হয়ে আরো সমস্যা সৃষ্টি করবে। আমাদের সমাজ কিন্তু এ বিষয়ে মোটেই বিচলিত নয় এবং এর উত্তর পেতেও খুব কম আগ্রহী।
মানুষের সম্যক দৃষ্টি, সম্যক চেতনা, সম্যক উদ্যোগ, সম্যক কর্ম, সম্যক জ্ঞান, সম্যক প্রজ্ঞা আর সম্যক সংগ্রামের উপরই নির্ভরশীল ইতিহাসের টেকসই গতি ও চরম বিকাশ। সমাজরূপান্তরের জন্য এগুলোর কোন বিকল্প নেই যদিও পথটা মোটেই মসৃণ নয়। তাই বলে কি সমাজের পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় ছেদ পড়ে যাবে? না, পড়তে পারে না। এখন প্রয়োজন বিজ্ঞামনস্ক আলোকিত মানুষ, যাঁরা বুদ্ধের মৌলিক বানীর সঠিক ব্যাখ্যা করে সমাজকে কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে আলোর সন্ধান দেবেন।
সকল প্রাণী সুখী হউক।
Leave a Reply