আচার্য্য বুদ্ধঘোষ কতৃক নিবন্ধিত ত্রিপিটকের অন্তর্গত দীর্ঘনিকায়ের অর্থকথা সুমংগলবিলাসিনি থেকে সংগৃহীত সারার্থ। আমার বিশ্বাস ত্রিপিটকের মূলে এর কোথাও উল্লেখ নেই। অতএব এ অবধি বাংলায় যে ত্রিপিটক পাওয়া যাচ্ছে তাতে তার উল্লেখ থাকার কথা নয়। কেউ উল্লেখ থাকলে কোথায় আছে তা দয়া করে জানাবেন কী।
তথাগতের দৈনিক কৃতকে পাঁচ ভাগে ভাগ করে দেখানো হয়েছে যথাঃ ১) ভোরেরবেলাঃ ৪টা থেকে দুপুর ১২টা, ২) অপরাহ্নঃ দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা, ৩) রাত্রির প্রথম ভাগঃ সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত্রি ১০টা, ৪) রাত্রির মধ্যম ভাগঃ রাত্রি ১০টা থেকে রাত্রি ২টা, ৫) রাত্রির শেষ অংশঃ রাত্রি ২টা থেকে রাত্রি ৪টা।
১) ভোরেরবেলাঃ ৪টা থেকে দুপুর ১২টাঃ তথাগত ভোর ৪ ঘটিকায় শয্যা ত্যাগ করিয়া হাত-মুখ ধৌত করিয়া ও অন্যান্য প্রয়োজনাদি সম্পন্ন করিয়া ভোর ৫ ঘটিকা পর্যন্ত বিদর্শনে রত থাকিতেন। ভোর ৬টায় কাহার ও কোন সাহায্যের প্রয়োজন থাকিলে তাহা নিস্পন্ন করিতেন যেমনঃ অঙ্গুলিমাল, বিশাখা, সারিপুত্র মোজ্ঞলায়ন সহ অনেকে যে এ সময় তথাগত কতৃক সাহায্যপ্রাপ্ত তা উল্লেখ্য বিভিন্ন সূত্রে। তৎপর ভিক্ষান্নে বাহির হইতেন। কখন ও একা কখন ও বা তাহার শিষ্যসমেত। শিষ্যসমেত হইলে শিষ্যরা এক লাইনে সারিবদ্ধ হইয়া তাহার পশ্চাৎ গমন করিতেন। উক্ত তথাগতের ৮০ বছর বয়সকালে ও এ রীতির রদবদল হয় নাই। এক দুয়ার হইতে আর এক দুয়ারে ভিক্ষান্নে, চক্ষুনেত্র থাকিত ভূমি অভিমুখে, নীরবতায় ভিক্ষাপাত্রে যাহাই দান পাইতেন তাহা বিনয়চিত্তে গ্রহন করিতেন। কখনো কোন উপাসক/ উপাসিকার গৃহতে নিমন্ত্রিত হইলে আহার সমাপনে প্রার্থিত হইলে ধর্মদেশনা করিতেন।
২) অপরাহ্নঃ দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টাঃ বিহারে প্রত্যাবর্তনে ভিক্ষুসংঘ তথাগতের স্বশরীর উপস্থিতির মহিমা স্মরণ করিয়া ধর্মদেশনা প্রার্থনা করিলে তথাগত তাহাদের ধর্মদান ও বিদর্শন শিক্ষা দিতেন। তৎপর তথাগত শয়নকক্ষে প্রবেশ করিয়া প্রয়োজন হইলে ডান পার্শ্বস্থ হইয়া ডান হস্তের উপর স্মৃতিমান হইয়া সিংহের ন্যায় বিশ্রাম গ্রহন করিতেন। বিশ্রাম শেষে মহা করুণা সম্পতিতে নিবন্ধিত হইয়া দিব্যচক্ষুতে বিহারে কিংবা কাছে ও দূরে অবলোকন করিতেন যাহার তাহার ধর্মোপদেশের প্রয়োজন ঘটিয়াছে এবং সে নিমিত্ত সাধারন হইলে সাধারনের ভাষায়, ক্ষত্রিয় হইলে ক্ষত্রিয়ের ভাষায়, সাধারন হইলে স্বর্গ, নরক, দান, শীল ইত্যাদির বর্ননা আর আর্য হইলে নৈর্বানিক শিক্ষা ব্যক্ত করিতেন।
৩) রাত্রির প্রথম ভাগঃ সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত্রি ১০টাঃ এ অংশটি বিশেষ করে বরাদ্ধ ছিল ভিক্ষুসংঘের প্রতি। এ সময় ভিক্ষুরা তাহদের বিভিন্ন সন্দেহ প্রকাশ ও অবসান, প্রশ্নোত্তর, পথনির্দেশনা, ধর্মসুধা গ্রহন করিতেন তথাগতের করুনায়।
৪) রাত্রির মধ্যম ভাগঃ রাত্রি ১০টা থেকে রাত্রি ২টাঃ এ অংশে দেব, ব্রক্ষ্ম, অশরীরিরা তথাগতের শরণাপন্ন হয়ে তাহদের বিভিন্ন সন্দেহ প্রকাশ ও অবসান, প্রশ্নোত্তর, পথনির্দেশনা, ধর্মসুধা গ্রহন করিতেন তথাগতের করুনায়।
৫) রাত্রির শেষ অংশঃ রাত্রি ২টা থেকে রাত্রি ৪টাঃ এ অংশটি তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথমভাগে,তিনি সময় কাটাতেন চংক্রমন করে, ২য় ভাগে তথাগত শয়নকক্ষে প্রবেশ করিয়া ডান পার্শ্বস্থ হইয়া ডান হস্তের উপর স্মৃতিমান হইয়া সিংহের ন্যায় বিশ্রাম গ্রহন করিতেন। তৃতীয় ভাগে বিশ্রাম শেষে মহা করুণা সম্পতিতে নিবন্ধিত হইয়া দিব্যচক্ষুতে বিহারে কিংবা কাছে ও দূরে অবলোকন করিতেন যাহার তাহার ধর্মোপদেশের প্রয়োজন ঘটিয়াছে এবং সে নিমিত্ত সাধারন হইলে সাধারনের ভাষায়, ক্ষত্রিয় হইলে ক্ষত্রিয়ের ভাষায়, সাধারন হইলে স্বর্গ, নরক, দান, শীল ইত্যাদির বর্ননা আর আর্য হইলে নৈর্বানিক শিক্ষা ব্যক্ত করিতেন।
স্নেহাশীষ প্রিয় বড়ুয়া, প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক নির্বানকামনী গ্রুপ, লিখক, গবেষক, চিন্তাবীদ ও দানশীল ব্যক্তিত্ব।
Leave a Reply