জ্ঞান অন্বেষণ নিউজঃ- হে ভিক্ষুগণ, এই দুই ব্যক্তি মূর্খ। কে কে? যে নিজের দোষ দেখে না এবং যে অন্য দোষ স্বীকারকারীকে ক্ষমা প্রদর্শন করে না। ভিক্ষুগণ, এই দুই ব্যক্তি মূর্খ। ভিক্ষুগণ, এই দুইজন জ্ঞানী, কে কে? যে নিজে নিজের দোষ দেখে এবং যে অন্য দোষ স্বীকারকারীকে ক্ষমা করে। ভিক্ষুগণ, এই দুইজন জ্ঞানী।
ভিক্ষুগণ, এই দুইজন তথাগতকে ভ্রান্ত প্রতিপন্ন করে। কে কে? ঈর্ষাপরায়ণ দুষ্ট লোক এবং তাহার ভ্রান্ত মতে বিশ্বাসী ব্যক্তি। এই দুইজন তথাগতকে ভ্রান্ত প্রতিপন্ন করে।ভিক্ষুগণ, এই দুইজন তথাগতকে ভুল প্রতীয়মান করে। কে কে? তথাগত যাহা কখনও বলেন নাই এইরূপ উক্তি তথাগতের বলিয়া যে দাবি করে এবং তথাগতের ভাষিত ও আলাপিত বিষয়কে তথাগত কর্তৃক অভাষিত অনালাপিত বলিয়া যে দাবি করে। ভিক্ষুগণ, এই দুইজন তথাগতকে ভুল প্রতীয়মান করে।
ভিক্ষুগণ, এই দুইজন তথাগতকে ভ্রান্ত প্রতিপন্ন করে না। কে কে? যে তথাগতের অভাষিত অনালাপিত বিষয়কে তথাগতের অভাষিত অনালাপিত বিষয় দাবি করে এবং তথাগতের ভাষিত আলাপিত বিষয়কে তথাগতের ভাষিত আলাপিত বিষয় বলিয়া দাবি করে। ভিক্ষুগণ, এই দুইজন তথাগতের ভ্রান্ত প্রতিপন্ন করে না।
ভিক্ষুগণ, এই দুইজন তথাগতের ভুল প্রতিপন্ন করে না। কোন দুইজন? যে ব্যক্তি অব্যাখ্যাত সূত্রকে ব্যাখ্যাত বলিয়া এবং ব্যাখ্যাত সূত্রের ব্যাখ্যা দাবি করে না। ভিক্ষুগণ, এই দুইজন তথাগতকে ভুল প্রতিপন্ন করে না।
ভিক্ষুগণ, অপ্রকাশ্যে কৃত কর্মের দ্বিবিধ গতি প্রত্যাশিত নরক এবং তির্যক যোনিতে জন্ম লাভ; প্রকাশ্যে কৃত কর্মের দ্বিবিধ গতি প্রত্যাশিত-দেব বা মনুষ্যরূপে পুনর্জন্ম লাভ।
ভিক্ষুগণ, মিথ্যাদৃষ্টিপরায়ণ ব্যক্তির দ্বিবিধ গতি প্রত্যাশিত-নরকে বা তির্যক যোনিতে পুনর্জন্ম প্রাপ্তি; ভিক্ষুগণ, সম্যক দৃষ্টিযুক্ত ব্যক্তির দ্বিবিধ গতি প্রত্যাশিত-দেব বা মনুষ্য হিসেবে পুনর্জন্ম লাভ।
ভিক্ষুগণ, দুঃশীলের দ্বিবিধ গতি প্রতীক্ষিত-নরকে বা তির্য্যগ্ যোনিতে জন্ম লাভ। ভিক্ষুগণ, শীলবানের (নীতিবানের) দ্বিবিধ গতি প্রত্যাশিত-দেব বা মনুষ্যত্ব লাভ।
ভিক্ষুগণ, আমি দ্বিবিধ ফল লক্ষ্য করিয়া একাকী অরণ্যে নির্জনবাসে প্রবৃত্ত হই। সেইগুলি কী কী? ইহজীবনে আত্ম-সুখে বিহরণের পথ দর্শন করিয়া এবং পরবর্তী প্রজন্মদের প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করিয়া। ভিক্ষুগণ, আমি এই দ্বিবিধ ফল প্রত্যক্ষ করিয়াই একাকী অরণ্যে নির্জন বাসে প্রবৃত্ত হই।
ভিক্ষুগণ, এই দ্বিবিধ অবস্থা বিদ্যাভাগীয় (বিদ্যায় এই দ্বিবিধ অবস্থা বিদ্যমান) কী কী? শমথ (শান্ত) এবং বিদর্শন (অন্তর্দর্শন)। শমথ (শান্তভাব) ভাবিত (অনুশীলিত) হইলে কী লাভ ঘটে? চিত্ত (মন) পরিশীলিত হয়। চিত্ত ভাবিত হইলে কী লাভ হয়? সর্বপ্রকার রাগ (লালসা) বিদূরিত হয়। ভিক্ষুগণ, বিদর্শন পরিশীলিত হইলে কী লাভ হয়-প্রজ্ঞা (অন্তর্দৃষ্টি) অনুশীলিত হয়। প্রজ্ঞা ভাবিত হইলে কী লাভ ঘটে? সর্ব প্রকার অবিদ্যা (অজ্ঞানতা) বিদূরিত হয়। ভিক্ষুগণ, রাগ (কাম বাসনা) প্রদুষ্ট চিত্ত বিমুক্ত হয় না বা অবিদ্যাচ্ছন্ন প্রজ্ঞা পরিশীলন করা যায় না। ভিক্ষুগণ, এই রাগবিরাগই (কাম বিরতিই) প্রকৃতপক্ষে চিত্তবিমুক্তি; অবিদ্যাবিরাগই (অজ্ঞানতা অবসানই) প্রজ্ঞাবিমুক্তি।”
Leave a Reply