স্ট্রোক করে সহকর্মী সষ্কটাপন্ন। হাত পা মোচড়াচ্ছে। চোখের মণি সংকুচিত হয়ে আছে। দ্রুত সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার জয়নাল আবেদীন টিটু। ঠিক তখনই বিজিবির একটি পাজেরো গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করলেন শ্রীমঙ্গল ৪৬ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। গাড়ি থেকে নেমেই জিজ্ঞেস করলেন আমাদের ড্রাইভার কোথায়? বুঝতে পারলেন আ্যাম্বুলেন্স চালকের বিলম্ব হবে। কাল ক্ষেপন না করেই কোনো কথা না বলেই ড্রাইভিং সিটে বসে অ্যাম্বুলেন্স স্টার্ট দিয়ে ড্রাইভারের রুমের কাছে নিয়ে গেলেন ৷
আর এ নিয়ে জেলা জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হলেন ৪৬ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যাম ফেসবুকে অনেকের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন বিজির এ অফিসার।
খোঁজ নিযে জানা যায়, আ্যম্বুলেন্সে ছিলেন বিজিবি সদস্য ও ধর্মীয় শিক্ষক (ইমাম) শহিদুল ইসলাম। বর্তমানে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার জয়নাল আবেদীন টিটু বলেন, যখন অফিস প্রায় শেষের দিকে তখন হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করে। আমি এগিয়ে গেলাম। রোগীর বয়স প্রায় ৫৫ বছর। রোগীকে দেখেই পরীক্ষা করা শুরু করলাম। দেখলাম তার Glasgow Coma Scale-এর মাত্রা নেমে ৬ এ ৷ গলবিলে (Oropharznx) ফেনা জমেছে। তার হাত পা মোচড়ানো শুরু হয়ে গেছে। পিউপিল দ্বয় সংকুচিত হয়ে আছে। রোগীর সঙ্গে থাকা এক তরুণের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলাম।
সে সময় পাজেরো গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করলেন ৪৬ বিজিবি’র কমান্ডিং অফিসার। উনি কিছু জানতে চাওয়ার আগেই আমি বললাম, খুব সম্ভবত রোগী ব্রেইন স্ট্রোক করেছে। দ্রুত থাকে সিলেট পাঠাতে হবে এবং আমি রেফার্ড করে দিয়েছি।
এ সময় লে. কর্নেল সাহেব তার সহকর্মী সৈনিকদের জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কোথায়? জবাব এলো, তিনি এখনও আসেননি, পোশাক পড়ছেন। এরপর তিনি কোনো কথা না বলেই ড্রাইভিং সিটে বসে অ্যাম্বুলেন্স স্টার্ট দিয়ে ড্রাইভারের রুমের কাছে কাছে নিয়ে গেলেন।’
এ বিষয়ে ৪৬ বিজিবি’র কমান্ডিং অফিসার লে.কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘ডাক্তার যখন জানালেন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ তখন বুঝতে পারছিলাম প্রতিটা মিনিট আমার সহকর্মীর জীবন বাঁচানোর জন্য খুব দামি। এজন্য আমাদের ড্রাইভার ড্রেসাপ করতে যে সময় লাগবে তা আমি নষ্ট করতে চাইনি।’
Leave a Reply