এবার তাদের সামনে বিশ্বকাপ ধরে রাখার অভিযান। এই অভিযানে সফল হতে জার্মান ফুটবল দলের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে এ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই।
অতীত ইতিহাস তো আছেই। শুধু এই শতাব্দীর কথাও যদি ধরেন, বিশ্বকাপ ফুটবলে জার্মানদের অর্জন নেহাত কম নয়। ২০০২ থেকে ২০১৪—এই চার বিশ্বকাপ ফুটবলে চোখ ফেরালে বোঝা যাবে কেন জার্মানির ফুটবলকে ঘিরে ফুটবল অনুরাগীদের আলাদা একটা সমীহ রয়েছে। ২০০২ বিশ্বকাপে হয়েছে রানার্সআপ। ২০০৬ ও ২০১০ বিশ্বকাপে তৃতীয়। সর্বশেষ ব্রাজিল বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন, যেটি তাদের চতুর্থ শিরোপা।
পঞ্চম বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে জার্মান ফুটবল দল প্রস্তুতি দেশে না করে উড়ে গেছে ইতালির সাউথ টাইরলে। আল্পাইন পর্বতমালা-বেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি এই সাউথ টাইরলে এটাই প্রথম নয়; ১৯৯০, ২০১০ এবং ২০১৪ বিশ্বকাপের আগেও জার্মান দল নিজেদের প্রস্তুতি সেরেছিল এখানে। এ জায়গাটা কেন প্রস্তুতির জন্য বেছে নেওয়া, সেটি নিয়ে জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি রাইনহার্ড গ্রিন্ডেল বললেন, ‘টাইরলে চমৎকার আবহাওয়া। থাকার পরিবেশ, প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতার কারণে আমাদের জাতীয় দলকে সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি।’ জার্মান ফুটবল দলের কোচ জোয়াকিম লো বলছেন, ‘বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে আমাদের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির জন্য টাইরল একটি উপযুক্ত জায়গা।’ দলের ম্যানেজার অলিভার বিয়েরহফ মনে করেন, বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো বড় টুর্নামেন্টে প্রস্তুতির জন্য যে নিবিড় মনঃসংযোগের প্রয়োজন, সেই পরিবেশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা তাঁদের আবারও টাইরলে আসতে অনুপ্রাণিত করেছে।
এই হোটেলে থাকছে জার্মান ফুটবল দল।
সাউথ টাইরলের পাহাড় পরিবেষ্টিত গ্রির্লানে যে এলাকায় জার্মান জাতীয় ফুটবল দল অবস্থান ও অনুশীলন করছে, সেখানে ইতিমধ্যে শত শত ফুটবল অনুরাগী প্রিয় তারকাদের কাছ থেকে দেখতে ভিড় করছেন। অনুশীলনের সময় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না জেনেও ফুটবল-ভক্তরা আসছেন। তবে গত শুক্রবার অনুশীলনের কিছু সময়ের জন্য ফুটবল-ভক্তদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
জোয়াকিম লো এ মুহূর্তে ২৭ জন খেলোয়াড় নিয়ে অনুশীলন ক্যাম্প করলেও আগামী ৪ জুন সেটি ২৩ জনে নেমে আসবে। ওই দিন বিশ্বকাপ ফুটবলের ২৩ খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করবেন জার্মান কোচ। টাইরলে জার্মান ফুটবল দলের প্রশিক্ষণ চলবে ৭ জুন পর্যন্ত। অনুশীলনের ফাঁকে শনিবার জার্মান দল অস্ট্রিয়ার সঙ্গে একটি প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ খেলবে। জার্মানভক্তদের সুখবর, চোটে পড়া জাতীয় দলের গোলরক্ষক ম্যানুয়াল নয়্যার প্রায় সেরে উঠেছেন। শনিবার প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচে তাঁর খেলার কথা রয়েছে।
রাশিয়ার বিশ্বকাপকে ঘিরে এরই মধ্যে জার্মানিতে সাড়া পড়ে গেছে। জার্মানরা সবকিছুতেই উচ্ছ্বসিত হয়, তা নয়। তবে ফুটবল নিয়ে তাদের বিপুল আগ্রহ। বিশ্বকাপ সামনে রেখে জার্সি, নানা দেশের পতাকা, স্মারক, খেলোয়াড়দের ছবি ও স্টিকার প্রায় সবখানেই পাওয়া যাচ্ছে। জার্মানি এখন অধীর অপেক্ষায় রয়েছে আগামী ১৭ জুন মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচটির জন্য। এ ম্যাচ দিয়েই যে জার্মানদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু।
Leave a Reply